publisher
দ্বিমিক প্রকাশনী
প্রোগ্রামিং কনটেস্টের ইতিহাস কিন্তু অনেক পুরোনো। তোমরা কি কেউ আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালসের (ICPC World Finals) পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান দেখেছ? এখন তো আবার ইন্টারনেটের কল্যাণে সেই অনুষ্ঠান দেখতে সশরীরে হাজির হতে হয় না। তো যা বলছিলাম, সেই অনুষ্ঠানে প্রতিবার ড. বিল পাউচার (Dr. Bill Poucher) প্রতি বছরের বিজয়ীদের নাম বলে আর সেই লিস্ট শুরু হয় 1977 সাল থেকে। তার মানে আজ থেকে প্রায় 45 বছরেরও আগে প্রোগ্রামিং কনটেস্ট শুরু হয়েছে। আজ 2022 সালে এসে প্রোগ্রামিং কনটেস্টের বিভিন্ন প্লাটফর্ম দাঁড়িয়ে গেছে। ICPC World Finals, IOI, Code Jam, Hacker Cup, Atcoder World Tour Finals, Codechef SnackDown এবং আরো অনেক অনসাইট ইভেন্ট হয়। এ ছাড়াও অনলাইনে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা করার এবং প্র্যাকটিস করার বহু সাইট আছে। এ ছাড়া আছে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা নিয়ে আলোচনা করার অনেক ফোরাম। গত 10 বছরেরও কম সময়ে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার যে প্রসার হয়েছে, তা আসলে কথায় প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু কষ্টের বিষয় হলো, আমাদের দেশে সে তুলনায় তেমন প্রসার নেই। আমাদের দেশে গত দশ-পনেরো বছর ধরে গড়ে প্রতি বছর চার-পাঁচটি করে কনটেস্ট হয়। কিছু দিন আগে থেকে (2011 থেকে শুরু) প্রতি বছর প্রোগ্রামিং ক্যাম্প করার চেষ্টা করা হয়। এছাড়াও স্কুল-কলেজ পর্যায়ে NHSPC আয়োজন করা হচ্ছে অল্প কিছু দিন আগে থেকে, তাও আবার নিয়মিত নয়। এতেই সীমাবদ্ধ আমাদের প্রোগ্রামিং কনটেস্ট। সেই তুলনায় রাশিয়া, চীন, পোল্যান্ড যারা কিনা প্রোগ্রামিং কনটেস্টে সব সময় এগিয়ে থাকে, তাদের আয়োজন শুনলে বা দেখলে আমার বেশ খারাপ বা আফসোস লাগে। এজন্য না যে তারা অনেক কিছু করে। বরং তারা আমাদের চেয়ে অনেক কম অনসাইট কনটেস্ট করে। তারা যা করে তা হলো মানসম্মত ক্যাম্প। সেখানে তাদের বুড়ো কনটেস্ট্যান্টরা এসে মানসম্মত ক্লাস নেয় এবং মানসম্মত প্রবলেম নিয়ে আলোচনা করে। ফলে দেখা যায়, আমরা আমাদের দেশের কনটেস্টে দশটি সমস্যার ভেতরে সাত-আটটি করে সমাধান করতে পারলেও তাদের কনটেস্টে যে দশটি সমস্যা থাকে তার দুই বা তিনটি টেনেটুনে সমাধান করতে পারি। তারা ঠিকই আট-নয়টি করে সমাধান করে বসে থাকে। বলার অপেক্ষা রাখে না আমাদের আর তাদের ভেতরে আকাশ আর পাতাল তফাত।